bangabandhu

শেখ রেহানা পরিবার

বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা রেহানা। মায়ের ডাক নাম রেণুর প্রথম অক্ষর আর বড় বোন হাসিনার শেষের অক্ষর অক্ষুণ্ণ রেখে নাম। পারিবারিক পদবী যুক্ত হয়ে পরিপূর্ণ নাম শেখ রেহানা। অতি আদরের ছোট ভাই রাসেলের কাছে যিনি ছিলেন 'দেনা' আপা। তিনি ১৯৫৫ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা-মায়ের আদরের রেহানা বা মুন্নার জন্ম ও বেড়ে ওঠা এমন এক সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন বাঙালি জাতির সব আশা-ভরসার মূর্ত প্রতীক।

শেখ রেহানা যখন বুঝতে শিখেছেন, তখনই দেখেছেন বাবা শেখ মুজিব বাঙালি জাতির শোষণ মুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর কারাগারে। কারাগারই যেন তাঁর মূল বাড়ি। আর নিজ বাড়িতে তিনি যেন ক্ষণিকের অতিথি। শেখ রেহানা এক স্মৃতিচারণে লিখেছেন, "ছোটবেলায় দেখতাম, আব্বা প্রায়ই থাকতেন জেলখানায়। আমদের কাছে ঈদ ছিল তখন, যখন আব্বা জেলখানার বাইরে থাকতেন, মুক্ত থাকতেন। আব্বাও জেলের বাইরে, ঈদও এলো এমন হলে তো কথাই নেই। আমাদের হতো ডাবল ঈদ।"

শেখ রেহানা

শেখ রেহানা

বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা

জন্ম : ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ সাল

জন্মস্থান : টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ

দাম্পত্য সঙ্গী : ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক

১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবার নিহত হন। তখন তিনি বড় বোন শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে জার্মানি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি যুক্তরাজ্যে 'রাজনৈতিক আশ্রয়' প্রার্থনা করেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁর প্রার্থনা মঞ্জুর করেন ও সেখানেই অদ্যাবধি অবস্থান করছেন শেখ রেহানা। মাঝে মাঝে বাংলাদেশে কিছুদিনের জন্য অবস্থান করেন।

পারিবারিক জীবন

শেখ রেহানার স্বামী ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল লন্ডনের কিলবার্নে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সুখ-দুঃখের সাথী, বঙ্গবন্ধুর ফুফাতো ভাই মোমিনুল হক খোকার বাড়িতে ১৯৭৭ সালের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে। শফিক সিদ্দিক তখন বিলেতের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষারত ছিলেন। শেখ রেহানার বিয়েতে একমাত্র জীবিত বোন টিকিটের টাকা জোগাড় করতে পারেননি বলে অনুপস্থিত ছিলেন।

ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক
ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক

এই দম্পতির ঘরে দুই কন্যা এবং এক পুত্রের জন্ম হয়। তাঁরা হলেন :

রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক

জন্ম :

২১ মে

১৯৮০

রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক

টিউলিপ সিদ্দিক

জন্ম :

১৬ সেপ্টেম্বর

১৯৮২

টিউলিপ সিদ্দিক

আজমিনা সিদ্দিক

জন্ম :

-

-

আজমিনা সিদ্দিক

রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক

বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার পুত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ১৯৮০ সালের ২১ মে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি প্রথম। তাঁর স্ত্রী পেপি কিভিনিয়ামি সিদ্দিক, কন্যা লীলাতুলী হাসিনা সিদ্দিক (জন্ম: ৩১ অক্টোবর, ২০১০) এবং পুত্র কাইয়াস মুজিব সিদ্দিক (জন্ম: ৩০ মার্চ, ২০১৩)।

শিক্ষাজীবনে বিশ্বখ্যাত লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। রেদওয়ান মুজিব একই প্রতিষ্ঠান থেকে কমপ্যারেটিভ পলিটিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন। এতে তাঁর অন্যতম পাঠ ছিলো কমপেয়াটিভ পলিটিক্স, কনফ্লিক্ট অ্যান্ড রেগুলেশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি।

রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক

রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি

জন্ম : ২১ মে ১৯৮০ সাল

দাম্পত্য সঙ্গী : পেপি কিভিনিয়ামি সিদ্দিক

পুত্র : কাইয়াস মুজিব সিদ্দিক

কন্যা : লীলাতুলী হাসিনা সিদ্দিক

দেশে আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। তাঁর নির্দেশনায় প্রকাশিত হচ্ছে 'মুজিব' নামের একটি শিশুতোষ প্রকাশনা। জীবনীভিত্তিক এই প্রকাশনার মধ্য দিয়ে ছোট ছোট শিশুদের কাছে পরিচিত করে তোলা হচ্ছে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে।

টিউলিপ সিদ্দিক

শেখ রেহানার জ্যেষ্ঠ কন্যা টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনের সেন্ট হেলিয়ার হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে বাংলাদেশ, ব্রুনাই, ভারত, সিঙ্গাপুর ও স্পেনে। স্বামী ক্রিস পার্সির সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে বসবাস করেন। এই দম্পতির এক পুত্র ও কন্যা রয়েছে। কন্যা আজালিয়া জয় পার্সি ও পুত্র রাফায়েল মুজিব সেন্ট জন পার্সি।

১৯৯৮ সালে ১৫ বছর বয়সে তিনি উত্তর লন্ডনে আসেন এবং এ লেভেল করেন। এরপর তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি ও লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে রাজনীতি, নীতি ও সরকারবিষয়ে দ্বিতীয় মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।

টিউলিপ সিদ্দিক

টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক

জন্ম : ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮২ সাল

দাম্পত্য সঙ্গী : ক্রিস্টিয়ান উইলিয়াম সেন্ট জন পার্সি

পুত্র : রাফায়েল মুজিব সেন্ট জন পার্সি

কন্যা : আজালিয়া জয় পার্সি

টিউলিপ মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেবার পার্টিতে যোগ দেন। রাজনীতিতে যোগ দেবার পেছনে তাঁর বাবার অসুস্থতা একটি বড় কারণ ছিল। স্কুলে পড়াকালীন বাবা শফিক সিদ্দিক স্ট্রোক করেন এবং বাক শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাঁর চিকিৎসা জন্য ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। এই সেবা নিতে গিয়ে রাজনীতি সচেতন টিউলিপ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সবসময়ে জনসেবা ও পার্টির সাথে কার্যকরভাবে যুক্ত থাকায় লেবার পার্টি ২০১৫ সালে তাঁকে মনোনয়ন দেয় লন্ডনের হ্যামস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে। প্রতিবছর হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজনৈতিক লড়াই হয় এ আসনটিতে। টিউলিপ প্রথমবারেই জয়ী হন এবং তারপর ২০১৭ এবং সর্বশেষ ২০১৯ এর ডিসেম্বরে এই তৃতীয়বারের মত জিতে হ্যাটট্রিক করলেন। বিশেষত নিজ দল ক্ষমতায় না থাকলেও কোন আসন থেকে বিজয়ী হওয়া ধারাবাহিকভাবে, এক অসাধারণ রাজনৈতিক সাফল্য।

আজমিনা সিদ্দিক

শেখ রেহানার কনিষ্ঠ কন্যা আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ও লন্ডনে কন্ট্রোল রিস্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস সম্পাদক।

আজমিনা সিদ্দিক

আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী

শেখ রেহানার কনিষ্ঠ কন্যা

পিতা শেখ মুজিবের সাথে শেখ রেহানা
পিতা শেখ মুজিবের সাথে শেখ রেহানা
জ্যেষ্ঠ কন্যা টিউলিপের সাথে শেখ রেহানা
জ্যেষ্ঠ কন্যা টিউলিপের সাথে শেখ রেহানা
বড় বোন শেখ হাসিনার সাথে শেখ রেহানা
বড় বোন শেখ হাসিনার সাথে শেখ রেহানা

পরিবারের সদস্য-বৃন্দ

শেখ রেহানা পরিবার

বাঁ দিক থেকে- আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিকের স্বামী ক্রিস পার্সি, টিউলিপ সিদ্দিক, শেখ রেহানা এবং রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

শেখ হাসিনা

বঙ্গবন্ধুর

জ্যেষ্ঠ কন্যা

বিস্তারিত